এবং তাঁর প্রিয় বান্দাদের বৈশিষ্ট্য
আল্লহর পরিচয়
“আল্লহ” শব্দটি ইসলামে একমাত্র অদ্বিতীয় উপাস্যের প্রকৃত নাম।
এটি গঠিত হয়েছে “আল” (নির্দিষ্ট) + “ইলাহ্” (উপাস্য) থেকে, অর্থাৎ আল-ইলাহ্ → একমাত্র সত্য উপাস্য, স্রষ্টা ও প্রতিপালক।
ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন: “আল্লহ” নামটি এসেছে আরবি মূল “আলিহা” থেকে, যা উপাসনার সাথে সম্পর্কিত—
অর্থ: যিনি যাবতীয় উপাসনার একক যোগ্য।
সূরাহ ইখলাছ (১১২/১-৪)
قُلْ هُوَ اللّٰهُ أَحَدٌ ١
اللّٰهُ الصَّمَدُ ٢
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ ٣
وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ٤
বলুন: তিনিই আল্লহ, একক। আল্লহ অমুখাপেক্ষী, চিরস্থায়ী।
তিনি জন্ম দেননি এবং জন্মগ্রহণ করেননি। এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।
আইয়াতুল কুরসী (2/255)
اللّٰهُ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَّهُ مَا فِي السَّمٰوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمٰوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ ٢٥٥
আল্লহ, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বপালনকর্তা। তাঁকে তন্দ্রা বা ঘুম স্পর্শ করে না। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর যা কিছু আছে সব তাঁরই। কে আছেন, যিনি তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর নিকট সুপারিশ করতে পারেন? তিনি জানেন যা তাদের সামনে এবং যা তাদের পেছনে আছে। তারা তাঁর জ্ঞানের কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, তিনি যা ইচ্ছা করেন তা ছাড়া। তাঁর কুরসি আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত। এগুলোর সংরক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ, মহামহান।
সূরহ আল-হাশর(৫৯/২২-২৪)
هُوَ اللّٰهُ الَّذِي لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ۖ هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيمُ ٢٢ هُوَ اللّٰهُ الَّذِي لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ ۚ سُبْحٰنَ اللّٰهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ ٢٣ هُوَ اللّٰهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ ۖ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنٰى ۚ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمٰوٰتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ ٢٤
তিনিই আল্লহ, যিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্য সবকিছুর জ্ঞাত। তিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
তিনিই আল্লহ, যিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি বাদশাহ, পবিত্র, শান্তিদাতা, নিরাপত্তাদাতা, সংরক্ষণকারী, পরাক্রমশালী, বাধ্যকারী, মহানুভব। আল্লহ মহান, যা কিছু তারা তাঁর সাথে শরিক করে তার ঊর্ধ্বে।
তিনিই আল্লহ, সৃষ্টিকর্তা, উদ্ভাবক, রূপদাতা। তাঁরই রয়েছে সুন্দরতম নামসমূহ। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবই তাঁর প্রশংসা করে। আর তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
আল্লহর নূরের একটি মনমুগ্ধকর উপমা (24/35)
اللَّهُ نُورُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ مَثَلُ نُورِهِ كَمِشْكَاةٍ فِيهَا مِصْبَاحٌ ۖ الْمِصْبَاحُ فِي زُجَاجَةٍ ۖ الزُّجَاجَةُ كَأَنَّهَا كَوْكَبٌ دُرِّيٌّ يُوقَدُ مِن شَجَرَةٍ مُّبَارَكَةٍ زَيْتُونَةٍ لَا شَرْقِيَّةٍ وَلَا غَرْبِيَّةٍ يَكَادُ زَيْتُهَا يُضِيءُ وَلَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ نَارٌ ۚ نُورٌ عَلَىٰ نُورٍ ۗ يَهْدِي اللَّهُ لِنُورِهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَيَضْرِبُ اللَّهُ الْأَمْثَالَ لِلنَّاسِ ۗ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ ٣٥
আল্লহ্ আসমানসমূহ ও যমীনের নূর, তাঁর নূরের উপমা যেন একটি দীপাধার যার মধ্যে আছে এক প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচের আবরণের মধ্যে স্থাপিত, কাঁচের আবরণটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত, তা জ্বালানো হয় বরকতময় যায়তূন গাছের তৈল দ্বারা যা শুধু পূর্ব দিকের (সূর্যের আলোকপ্রাপ্ত) নয় আবার শুধু পশ্চিম দিকের (সূর্যের আলোকপ্রাপ্তও) নয়, আগুন তাকে স্পর্শ না করলেও যেন তার তৈল উজ্জ্বল আলো দিচ্ছে; নূরের উপর নূর! আল্লহ্ যাকে ইচ্ছে হেদায়েত করেন তাঁর নূরের দিকে। আল্লহ্ মানুষের জন্য উপমাসমূহ বর্ণনা করে থাকেন এবং আল্লহ্ সব কিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ।
কুরআনের গভীরে
আল্লহর গুণবাচক ৯৯ সুন্দর নাম সমূহ
পরম করুণাময়
অতি দয়ালু
রাজা
পবিত্র
শান্তিদাতা
বিশ্বাসযোগ্য
সংরক্ষণকর্তা
শক্তিমান
বাধ্যকারী
মহিমান্বিত
সৃষ্টিকর্তা
উদ্ভাবক
রূপকার
বারবার ক্ষমাশীল
অধীনকারী
অতিশয় দাতা
প্রদানকারী
জয়কারক
সর্বজ্ঞ
ধরার
ছাড়ার
নীচ করার
উঁচু করার
গৌরব দেওয়া
অপমান করার
শ্রোতা
দর্শনকারী
নির্ণায়ক
ন্যায়পরায়ণ
দয়া করা
খবরদার
শান্ত
মহান
ক্ষমাশীল
কৃতজ্ঞ
উঁচু
বৃহৎ
রক্ষাকর্তা
পুষ্টিকর
হিসাবকর্তা
মহান
উদার
তত্ত্বাবধায়ক
প্রত্যুত্তরকারী
বিস্তৃত
বিচারক
ভালবাসাপূর্ণ
মহিমান্বিত
জীবিতকারী
সাক্ষী
সত্য
বিশ্বাসভাজন
শক্তিমান
দৃঢ়
পোষক
প্রশংসিত
গণনাকারী
আরম্ভকারী
পুনরায় প্রেরণকারী
জীবনদাতা
মৃত্যুদাতা
জীবন্ত
স্বয়ং চলিত
সন্ধানকারী
মহিমান্বিত
একক
একমাত্র
অবলম্বনীয়
ক্ষমতাবান
অত্যন্ত শক্তিমান
অগ্রসরকারী
পরে পাঠানো
প্রথম
শেষ
প্রকাশ
অন্তর্নিহিত
শাসক
উচ্চতর
ভাল
তাওবা কবুলকারী
প্রতিশোধগ্রাহী
ক্ষমাশীল
করুণাময়
রাজ্যের অধিপতি
মহিমাময় ও সম্মানিত
ন্যায়পরায়ণ
সংগৃহীতকারী
অমীমাংসিত
ধনীকরনকারী
প্রতিবন্ধক
ক্ষতিকর
উপকারী
আলো
পথপ্রদর্শক
অদ্বিতীয়
অমর
উত্তরাধিকারী
সঠিক পথপ্রদর্শক
ধৈর্যশীল
আল্লহর ভালোবাসা
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِينَ
নিশ্চয়ই আল্লহ পরহেজগারদের ভালোবাসেন।
(সূরহ্ আল-বাকারাহ, আয়াত ২)
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
নিশ্চয়ই আল্লহ সৎকর্মীদের ভালোবাসেন।
(সূরহ্ আল-বাকারাহ, আয়াত ১৯৫)
وَاللَّهُ يُحِبُّ الصَّابِرِينَ
আর আল্লহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন।
(সূরহ্ আলে ইমরান, আয়াত ১৪৫)
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ
বিশ্বাসীরা একে অপরের ভাই।
(সূরহ্ হুজুরাত, আয়াত ১০)
فَإِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ
নিশ্চয়ই আল্লহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন।
(সূরহ্ বাকারাহ, আয়াত ২২২)
وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
আল্লহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নদের ভালোবাসেন।
(সূরহ্ তাওবাহ, আয়াত ১০৮)
আল্লহর বান্দাদের বৈশিষ্ট্য
আল্লহর বান্দাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ কুরআনের আলোকে পাঠ করুন, অনুধাবন করুন, অর্জনে নিবেদিত হোন
1. আল্লহ ও তাঁর রসূলকে ঈমান আনা এবং শিরক থেকে বিরত থাকা
[কুরআন থেকে পড়ুন: ৪:১৩৬]
2. নামাজ কায়েম করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:৩]
3. জাকাত প্রদান করা (সামাজিক দান) [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:৪৩]
4. ধৈর্য্য ও সংকল্পশীল হওয়া [কুরআন থেকে পড়ুন: ৩:১৪৬]
5. নির্দোষ ও শান্তিপূর্ণভাবে চলাফেরা করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২৫:৬৩]
6. ক্ষমাশীল হওয়া ও অন্যায় মাফ করে দেয়া [কুরআন থেকে পড়ুন: ৪২:৪০]
7. সত্য কথা বলা ও সৎ কর্ম করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৩৩:৭০]
8. নির্জন সময়ে আল্লহর স্মরণ করা (যিকির করা) [কুরআন থেকে পড়ুন: ২০:১৪]
9. আল্লহর প্রতি তওবা করা (পশ্চাতাপ) [কুরআন থেকে পড়ুন: ৬৬:৮]
10. দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সচেতন ও প্রস্তুত থাকা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২৮:৭৭]
11. আল্লহর অমুক্কা (আল্লহর পথে) রিজিকের জন্য খোলাখুলি ব্যয় করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:২৬৭]
12. সত্যবাদিতা বজায় রাখা, মিথ্যা থেকে বিরত থাকা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২২:৩০]
13. পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখা এবং মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবনের কথা মনে রাখা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২৩:৯৯-১০০]
14. অমানুষিক আচরণ ও দুরাচার থেকে বিরত থাকা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২৫:৬৩]
15. দুনিয়াবি মোহ থেকে মুক্ত থাকা ও ঈমানের পথে দৃঢ় থাকা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৩:২০০]
16. দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য্য ধারণ করা ও সাহায্যের জন্য আল্লহর প্রতি ভরসা রাখা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:১৫৩]
17. অন্যায় থেকে বিরত থাকা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ১৬:৯০]
18. পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতি ভালোবাসা ও সৎ আচরণ [কুরআন থেকে পড়ুন: ১৭:২৩]
19. গোপনে ও প্রকাশ্যে সৎকাজ করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:২৭৪]
20. আল্লহর কাছে সহায়তা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৪০:৬০]
21. পরকালের ভয়ে নিজেদের গোপনে ও প্রকাশ্যে পরোপকার করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:২৭৪]
22. পাপ থেকে তওবা করা এবং সৎ পথে ফিরে আসা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৬৬:৮]
23. সর্বদা আল্লহর কাছে সাহায্য চাওয়া ও ভরসা রাখা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৩:১৫৯]
24. ধৈর্য্য ও সদাচার বজায় রাখা [কুরআন থেকে পড়ুন: ১১:১১৫]
25. বুকে বিনয় ও নম্রতা ধারণ করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২৫:৬৩]
26. দুনিয়া জীবনের প্রলোভন থেকে সাবধান থাকা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২৮:৭৭]
27. আল্লহর পথে বিলম্ব না করা, তাড়াতাড়ি আমল করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২৪:৫৫]
28. ঈমানদারদের সহায়তা করা ও ভাইয়ের মত ভালোবাসা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৪৯:১০]
29. মানুষের সাথে ভদ্রতা ও সদয় ব্যবহার [কুরআন থেকে পড়ুন: ৪:৩৬]
30. আল্লহর স্মরণে লীন থাকা ও নিয়মিত দোয়া করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ১৩:২৮]
31. আল্লহর জন্য নিষ্ঠার সাথে ইবাদত ও তওবা করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৩৯:৫৩]
32. মিথ্যা থেকে দূরে থাকা ও সত্য কথা বলা [কুরআন থেকে পড়ুন: ১৬:১০৫]
33. অন্যায় ও অবিচার থেকে বিরত থাকা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৫:৮]
34. আল্লহর সাহায্য ছাড়া কাউকে ভয় না করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৩:১৭৫]
35. আল্লহর নির্দেশনা মানা ও অবাধ্য না হওয়া [কুরআন থেকে পড়ুন: ২৪:৫২]
36. দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সদা প্রস্তুত থাকা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:১৯৭]
37. আল্লহর পথে ধৈর্য্য ও সদাচার চালিয়ে যাওয়া [কুরআন থেকে পড়ুন: ৩১:১৭]
38. নির্দোষ ও ভালো লোকদের সঙ্গ পছন্দ করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২৫:২৭]
39. দানশীল ও দয়াalu হওয়া [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:২৬১]
40. আল্লহর প্রতি গভীর ভক্তি ও ভালোবাসা প্রকাশ করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:১৬৫]
41. সতর্কতা ও পরিপূর্ণ আত্মনিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৫৯:১৮]
42. অন্যায়ের প্রতিফলনে উত্তম আচরণ করা (ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ) [কুরআন থেকে পড়ুন: ৪১:৩৪]
43. আল্লহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও আত্মসমর্পণ করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৩:১৫৯]
44. সকল সৃষ্টির প্রতি দয়া ও করুণা প্রদর্শন করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২১:১০৭]
45. আল্লহর বান্দাদের প্রতি সদয় ও সাহায্যকারী হওয়া [কুরআন থেকে পড়ুন: ৮:৬১]
46. পৃথিবীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ১৬:৯০]
47. আল্লহর রাহমতের জন্য আকুল এবং অনুনয় বিনয় করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৭:৫৬]
48. নিজ এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া [কুরআন থেকে পড়ুন: ৬৬:৬]
49. কঠিন সময়ে আল্লহর প্রতি ভরসা রাখা [কুরআন থেকে পড়ুন: ৬৫:৩]
50. আল্লহর পথে ধৈর্য ধরে কষ্ট সহ্য করা [কুরআন থেকে পড়ুন: ২:১৫৩]
আল্লহর বান্দাদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো — তারা সর্বদা ঈমানের উপর অবিচল থাকে, যাকে হৃদয়ে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এবং প্রতিনিয়ত আল্লহর ইবাদতে মনোযোগী থাকে, সলাতের সঠিক প্রতিষ্ঠা ও ধারাবাহিকতায় নিবেদিত থাকে, যার মাধ্যমে তারা তাদের দৈনন্দিন জীবন আল্লহর স্মরণে পূর্ণ করে; নিয়মিত দান, সদাকাহ ও যাকাত প্রদান করে, যা তাদের সমাজে একতা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়, একই সঙ্গে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং অবিচার থেকে বিরত থাকে। তারা পরস্পরের প্রতি সত্যবাদিতা ও ন্যায়পরায়ণতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, পারস্পরিক ধৈর্য্য, সংযম এবং ক্ষমাশীলতায় উদ্বুদ্ধ এবং ভুল-ত্রুটি হলে তা ক্ষমা করে, এতে করে সামাজিক বন্ধন আরও মজবুত হয়। তারা যমীনে নম্রচিত্তে ও ভদ্রভাবে চলাফেরা করে, মূর্খদের সাথে তর্কে না জড়িয়ে বরং সৌজন্যমূলক আচরণ বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে, যা তাদের সামাজিক পরিবেশকে নিরাপদ ও সুস্থ রাখে। আল্লহর আদেশে সিজদা ও কিয়াম পালন করে আত্মসমর্পণে লিপ্ত থাকে, যার মাধ্যমে তারা আল্লহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টায় থাকে। তারা সর্বদা তওবা ও ইবাদতে নিষ্ঠাবান, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লহর অনুগ্রহ ও ক্ষমা প্রার্থনা করে, যা তাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে এবং ভুল থেকে ফিরে আসার পথ খুলে দেয়। পরকালের জন্য সচেতন ও প্রস্তুত থেকে তারা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে সৎ কর্ম ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকে, কঠিন পরিস্থিতিতেও আল্লহর প্রতি ভরসা ও ধৈর্য ধরে জীবন যাপন করে। পরিবার ও সমাজে তারা সহযোগী, সদয় ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শন করে, যা পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্মান বৃদ্ধি করে। গোপনে ও প্রকাশ্যে সৎকাজে উৎসাহী থেকে তারা সকলকে প্রেরণা যোগায়। তারা সর্বদা আল্লহর স্মরণ ও যিকিরে লীন থাকে এবং সত্যবাদিতা, ক্ষমাশীলতা ও নম্রতায় অনন্য; এই গুণাবলীর মাধ্যমে তারা আল্লহর প্রিয় বান্দা হয়ে ইনশাআল্লহ সফল ও শান্তিময় জীবন লাভ করে। তাদের জীবনযাপন হলো দৃষ্টান্ত, যা অনুসরণীয় ও অনুপ্রেরণামূলক।