﷽
পরম করুনাময় চিরস্থায়ী দয়ালূ আল্লহর নামে-وَالْعَصْرِ
শপথ যুগের (সময়ের)।
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
কেবল তারা ছাড়া, যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, আর সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।
ঈমান হল ইসলামী জীবনের মূল ভিত্তি। এটি ছাড়া অন্য সবকিছু অর্থহীন। সঠিক ঈমান মানুষকে আল্লাহর সাথে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করতে সাহায্য করে।
📖 কুরআন:
قُولُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنزِلَ إِلَيْنَا …
“তোমরা বলো, আমরা আল্লাহর প্রতি, যা আমাদের নাযিল করা হয়েছে তার প্রতি, এবং যা ইবরাহীম, ইসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাদের সন্তানদের প্রতি নাযিল করা হয়েছে তার প্রতি ঈমান এনেছি।”
(সূরা আল-বাকারাহ 2:136)
রাসূল ﷺ বলেছেন:
الإِيمَانُ بِضْعٌ وَسَبْعُونَ – أَوْ بِضْعٌ وَسِتُّونَ – شُعْبَةً
“ঈমানের শাখা সত্তরের অধিক বা ষাটের অধিক। সর্বশ্রেষ্ঠ শাখা হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লহ্ বলা, এবং সর্বনিম্ন হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো।”
(সহীহ মুসলিম 35)
📌 প্রধান শাখা সমূহ:
- আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ এর প্রতি বিশ্বাস।
- সলাত প্রতিষ্ঠা।
- যাকাত প্রদান।
- সৎকাজ করা ও মন্দ থেকে বিরত রাখা।
- কষ্টকর জিনিস দূর করা।
📖 কুরআন:
إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ …
“মুমিন তো কেবল তারা, যাদের অন্তর কেঁপে ওঠে যখন আল্লাহর নাম স্মরণ করা হয়, আর যখন তাদের কাছে তাঁর আয়াতগুলো তিলাওয়াত করা হয় তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়, এবং তারা কেবল তাদের রবের উপর ভরসা করে।”
(সূরা আনফাল 8:2)
📖 হাদিস:
রাসূল ﷺ বলেছেন,
“মুমিন সেই ব্যক্তি, যার কাছ থেকে মানুষ তাদের ধন-সম্পদ ও জীবন নিরাপদ মনে করে।”
(তিরমিজি 2627, সহীহ)
📖 কুরআন:
أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ
“মানুষ কি ধারণা করে যে, তারা বলবে ‘আমরা ঈমান এনেছি’, আর তাদের পরীক্ষা করা হবে না?”
(সূরা আনকাবুত 29:2)
📖 হাদিস:
রাসূল ﷺ বলেছেন,
“যে ব্যক্তি মানুষের রাগান্বিত হওয়ার পরও আল্লাহকে খুশি করার জন্য ঈমানের উপর অবিচল থাকে, আল্লাহ তাকে যথেষ্ট করে দেন।”
(মুসনাদ আহমদ 23108, সহীহ)
সৎকাজ (صلاحات) হলো ঈমানের বহিঃপ্রকাশ; ইহকাল ও আখিরাত—উভয়ক্ষেত্রে কল্যাণ বয়ে আনে। সৎকাজ ধারাবাহিকভাবে ও নিবেদনভরে করা ইসলামে খুব গুরুত্বপূর্ন।
📘 শাব্দিক: সৎকাজ = ভালো/ধর্মগত কাজ করা (الصَّالِحَاتِ)।
📗 আভিধানিক: আল্লাহর নির্দেশে আত্মত্যাগ, ন্যায়-পরিচর্যা এবং মানুষকে উপকারে নিয়োজিত কৃত্য।
📖 কুরআন (উৎস):
Arabic: إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ …
বাংলা অনুবাদ: “নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে … তাদের প্রতিদান তাদের রব্র কাছে আছে; তাদের ওপর কোনো ভয় নেই এবং তারা শোকাক্রান্তও হবে না।” (সূরা আল-বাকারাহ 2:277)
🕌 হাদীস (মন্তব্য): “إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ…” — কর্ম বিচার হয় নীয়তের ওপর। (সহীহ বুখারি / সহীহ মুসলিম)
- ✅ নামাজ কায়েম করা
- ✅ যাকাত ও সদকা প্রদান
- ✅ সৎবিচার ও সততা (কার্যক্ষেত্রে, ব্যবসায়)
- ✅ মানুষকে শিক্ষাদান ও দাওয়াত
- ✅ অসহায়-দুঃখীকে সাহায্য
- ✅ পরিবেশ রক্ষা, প্রতিবেশীর অধিকার রক্ষা
❌ বাধা: শয়তানের ফুতুর (প্রলোভন), ইন্দ্রিয়ের লালসা, সময়-অসংগতি, সামাজিক চাপে ভয়।
✅ প্রতিরোধ:
নিয়মিত দাওয়াত ও সুশিক্ষা (ইলম),
ছোট-কাজ নিয়মিত করা (Consistency),
সৎসঙ্গ (friends/community),
দোয়া ও তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা)।
📖 কুরআন সূত্র: “أَحَسِبَ النَّاسُ أَن يُتْرَكُوا أَن يَقُولُوا آمَنَّا وَهُمْ لَا يُفْتَنُونَ” — মানুষ হয়ত বলে ‘আমরা ঈমান এনেছি’ কিন্তু পরীক্ষা ছাড়া রাখা হবে না। (সূরা আল-আনকাবুত 29:2)
🕌 হাদিস (উদাহরণ): “কর্মে স্থির থাকতে নীয়ত পরিশোধ কর ও সংযুক্তি বজায় রাখ” — (সারসংক্ষেপ; নীয়ত-হাদিস দেখুন: সহীহ বুখারি)
📖 কুরআন: “فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ…” — অক্লান্ত ক্ষুদ্র সৎকর্মের ফলও দেখা যাবে। (সূরা আল-زلزالাহ 99:7-8)
🕌 হাদিস: “الصدقة تطفئ الخطيئة…” (দরিদ্রকে দান—পাপ পরিশোধে সহায়ক) — (দাওয়াহি হাদিসাদির সারসংক্ষেপ)
✅ সুফল তালিকা: অন্তরের শান্তি, সমাজে ন্যায়, আল্লাহর নৈকট্য, জান্নাতের প্রতিদান।
সত্য প্রচার ও অন্যকে পথ-প্রদর্শন করা—একজন মুমিনের দায়িত্ব। এটি কেবল ভাষা নয়, নমুনা (practice) ও নিকট সম্পর্কেও নির্ভর করে।
📘 শাব্দিক: ‘দাওয়াত’ = আহবান/বলানো (الدعوة)।
📗 আভিধানিক: সত্যের পথে মানুষকে সততা, হিক্মাহ ও নাজুক উপায়ে আহ্বান করা—কেবল কৌতুক নয় বরং আমলের দ্বারা প্রমাণ করা।
📖 কুরআন (আয়াত): ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ…
“তোমার পালনকর্তার পথের প্রতি (লোককে) আমন্ত্রণ কর—হিকমত ও মহান উপদেশ দ্বারা।” (সূরা অন-নাহল 16:125)
🕌 হাদিস: “بلغوا عني ولو آية” — আমার থেকে (রাসূল) কিছু পৌঁছে দাও, এমনকি একটি আয়াতই হোক। (সহীহ বুখারি)
✅ হিকমত (বুদ্ধিমত্তা) ও মوعিযাহ-হাসানাহ (ভদ্র উপদেশ)। (১৬:১২৫)
✅ উদাহরণ দিয়ে শেখানো (lead by example)।
✅ সহনশীলতা ও সহমর্মিতা।
✅ সহজ ভাষা ও সমঝদার উপস্থাপনা।
🕌 হাদিস-মন্তব্য: “مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ” — যে কাউকে কল্যাণের পথে নির্দেশিত করে, তারও তুল্য প্রতিদান আছে। (সংশ্লিষ্ট হাদিস)
✅ জ্ঞান অর্জন → ইসলামী দাওয়াতের মৌলিকতা ও পরিস্থিতি বুঝে নেওয়া।
✅ আখlaq-প্রমাণ (খুশবু/সু-আচরণ) — কথায় না, আমলে মানুষ আকৃষ্ট হয়।
✅ টার্গেট গ্রুপ ও পদ্ধতি বেছে নেওয়া (পরিবেশভিত্তিক ভাষা, সাংস্কৃতিক স্পর্শ)।
✅ স্থায়ী কার্যক্রম: টিউটোরিয়াল, অনলাইন ক্লাস, কমিউনিটি সার্ভিস, সহায়তা প্রোগ্রাম।
✅ ফলো-আপ ও ধৈর্য: ছোট সাফল্যকে উৎসাহিত করা।
📖 কুরআন: “وَلْتَكُنْ مِنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ…” — একজন জাতি সৃষ্টি কর যা কল্যাণে ডাকবে ও মন্দ থেকে বিরত রাখবে। (সূরা আল-ইমরান 3:104)
🕌 হাদিস: “بلغوا عني ولو آية” — দাওয়াতের মূল্য ও দায়িত্ব নির্দেশ করে। (সহীহ বুখারি)
✅ সুফল তালিকা: সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা, মানুষের হেদায়েতে অংশগ্রহণ, আল্লাহর কাছ থেকে বিশাল প্রতিদান ও আখিরাতে সাফল্য।
ধৈর্য (صَبْر) হলো ঈমানের অঙ্গ; একে মেনে চলা ও একে অন্যকে উৎসাহিত করা—সমাজকে সুদৃঢ় করে।
📘 শাব্দিক: ‘صبر’ = অপেক্ষা করা, সংকট সহ্য করা।
📗 আভিধানিক: কষ্ট ও পরীক্ষায় আল্লাহর নির্দেশ মেনে স্থির থাকা—নিয়মিত ইবাদত, ধৈর্য্য ও ধীরতা।
📖 কুরআন: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
“হে বিশ্বাসীগণ! ধৈর্য ও সলাত দ্বারা সহায়তা গ্রহণ কর; নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।” (সূরা আল-বাকারা 2:153)
“وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ…” — নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের পরীক্ষা করব… এবং ধৈর্যশীলদের সুখবর দাও। (2:155)
✅ নিয়মিত ওয়াক্ত-নামাজ ও কোরআন পাঠ।
✅ রোজা ও নফল ইবাদত (আত্মসংযম চর্চা)।
✅ ধৈর্য-ড্রিল: ছোট লক্ষ্য রেখে ধৈর্য অনুশীলন (উদাহরণ: ৩ দিনের ধৈর্য চর্চা → ৭ দিন ইত্যাদি)।
✅ সামাজিক সাহায্য: বিপদে একে-অপরকে সমর্থন করা।
✅ দোয়া ও তওবা: আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা।
✅ নিয়মিত ইবাদত ও ধৈর্যের অভ্যাস।
✅ অহিংসা ও বিনয়শীলতা।
✅ সঙ্কটকালে আল্লাহর ওপর ভরসা।
✅ ন্যায্য প্রতিক্রিয়া—ক্রোধে দমন, সুবিবেকপূর্ণ সিদ্ধান্ত।
🕌 হাদিস (প্রমাণ): “عَجَبًا لأَمْرِ الْمُؤْمِنِ، إنَّ أمْرَهُ كُلَّهُ خَيْرٌ…”
“মুমিনের ব্যাপারে বিস্ময় কাহিনী: তার কর্ম-পরিস্থিতি সবই কল্যাণকর—যদি সুখে কৃতজ্ঞ হয় তা তার জন্য ভাল, যদি দুঃখে ধৈর্য্য করে তাও তার জন্য ভাল।” (সহীহ মুসলিম)
📖 কুরআনীয় প্রতিশ্রুতি: “إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ” — আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে। (২:১৫৩)
🕌 হাদিস (উৎস): উপরোক্ত “عَجَبًا لأَمْرِ المؤمنِ…” (সহীহ মুসলিম) — ধৈর্যের বড় পুরস্কার-বক্তব্য।
✅ ফলাফল তালিকা: মানসিক স্থিতি, সামাজিক স্থায়িত্ব, আল্লাহর আনুগত্য ও আখিরাতে জ্ঞানার্জন-পুরস্কার।
🔁 প্রাকটিক্যাল টিপস (সংক্ষেপে): দৈনিক ধিকর (স্মরণ), নিয়মিত সলাত, ছোট-ছোট ত্যাগ ও সমাজভিত্তিক সমর্থন ব্যাবস্থা গড়ে তোলা।
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ [103:2]
- ইমান আনা
- সৎকর্ম করা
- সত্যের উপদেশ দেওয়া
- ধৈর্যের উপদেশ দেওয়া
الَّذِينَ آمَنُوا [103:3]
وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ [103:3]
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ [103:3]
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ [103:3]
وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ [103:3]
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ [103:3]
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ [103:3]
وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ [103:3]
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ [103:3]
وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ [103:3]
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ [103:3]
وَالْعَصْرِ…إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ [103:1-3]