যাকাত: প্রবৃদ্ধি ও পরিশুদ্ধ সম্পত্তির নিয়তা!
সহীহ সুন্নাহ, কুরআন ও ফতোয়ার আলোকে মুসলিম জীবনে যাকাতের ভূমিকা
﴿لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ… وَآتَى الْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَىٰ…﴾
আল্লহ ﷻ এই আয়াতে “আত্মীয়-স্বজন, এতিম, মিসকিন, পথিক ও মুক্তিপ্রত্যাশীদের” মাঝে সম্পদ দান করাকে প্রকৃত তাকওয়ার অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রাসূল ﷺ বলেন: “সদাকা প্রমাণ করে ঈমান।” — সহীহ মুসলিম
- যাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি
- নিষাব পরিমাণ সম্পদে ১ বছর পূর্ণ হলে যাকাত ফরজ হয়
- আল্লহ ﷻ বলেন: ﴿وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ﴾ — বহুবার কুরআনে উল্লেখ
ফতোয়া (اللجنة الدائمة 9/414): “যাকাত না দেয়া মহাপাপ এবং এক ধরনের কুফরীর পর্যায়ে পৌঁছায়।”
১. সম্পদের যাকাত:
- স্বর্ণ ও রূপা: নির্ধারিত নিষাবে পৌঁছলে ২.৫% যাকাত
- সঞ্চিত নগদ অর্থ, ব্যাংক ব্যালেন্স: বছরে ২.৫%
২. ব্যবসায়িক যাকাত:
- মূলধন, বিক্রয়যোগ্য পণ্যের মূল্য — ২.৫%
- মোট মূল্য নির্ধারণ করে যাকাত হিসাব
৩. কৃষি/ফসলের যাকাত (উশর):
- সেচ ছাড়া উৎপাদনে ১০%, সেচে ৫%
- সূরহ্ আন’আম: ১৪১ — “ফসল কেটে নেয়ার দিন যাকাত আদায় করো”
৪. পশুসম্পদ:
- উট, গরু, ছাগল — নির্দিষ্ট পরিমাণে যাকাত ফরজ
﴿إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ…﴾
- ফকীর — যাদের কিছুই নেই
- মিসকীন — অল্প আছে, প্রয়োজন মেটে না
- যাকাত আদায়কর্মী
- মু‘আল্লফ কুলুব (যাদের হৃদয় ইসলামমুখী করা)
- দাস মুক্তির জন্য
- ঋণগ্রস্ত মুসলিম
- আল্লহর পথে (জিহাদ, দাওয়াহ, ইলম)
- মুসাফির যারা পথে কষ্টে পড়েছে
- হাদীস: “যে ব্যক্তি যাকাত দেয় না, কিয়ামতের দিন তার সম্পদ গরম লোহার পাত বানিয়ে তার শরীরে দাগ দেওয়া হবে।” — সহীহ মুসলিম
- স্থায়ী ফতোয়া (9/408): “ইচ্ছাকৃতভাবে যাকাত বর্জন করলে ইসলামী আইনে দণ্ডযোগ্য হবে”
উপসংহার:
যাকাত কেবল দান নয়, বরং তা ইবাদতের অংশ। এটি মালকে পরিশুদ্ধ করে, দুনিয়াতে সম্পদের বারাকাহ এনে দেয় এবং আখিরাতে মুক্তির পথ সুগম করে।
আল্লহ আমাদের হালাল রিজিক দিন এবং তা থেকে প্রাপ্য হক আদায় করার তাওফিক দিন। আমীন।